স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাঁদা না দেয়ায় নবীগঞ্জে ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে লন্ডন প্রবাসীর জমির সামনের সরকারি জায়গা দখলের অভযোগ উঠেছে। শুধু জায়গা দখল নয়, তার বিরুদ্ধে সরকারী খাল লীজ দিয়ে টাকা আত্মসাত করা, টিআর, কাবিকাসহ বিভিন্ন বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে সাহস পাননা। তার এসব কর্মকান্ডে ক্ষিপ্ত হয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়রিও করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ২০/২৫ বছর পূর্বে নবীগঞ্জ শহরের ওসমানি রোডর বাসিন্দা লন্ডন প্রবাসী এরশাদ আলী মান্দারকান্দি এলাকায় কিছু জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ওই জমিতে তিনি মৎস্য খামার প্রতিষ্ঠা করেন। খামারের পাশেই ঢেতুল বিল থেকে আসা পটিখাল (পাঠান্তর) নামের সরকারি একটি খাল রয়েছে। ওই খালের পাড়সহ সংলগ্ন কিছু সরকারি জায়গা কয়েক বছর পূর্বে অবৈধভাবে দখল করে নেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার আব্দুল হাই। তিনি উক্ত জমি নিজের বলে জাল দলিলের মাধ্যমে প্রবাসী এরশাদ আলীর ছেলে মোস্তফা মিয়ার কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় তিনি মোস্তফা মিয়ার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছেন। ইউপি মেম্বার আব্দুল হাই মান্দারকান্দি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় তিনি ভয়ে কিছু বলতেনও না। সম্প্রতি তিনি দেশে এলে আব্দুল হাই আবারও তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেয়ায় আব্দুল হাই ও তার লোকজন মৎস্য খামার সংলগ্ন সরকারী জায়গা আবারও জোরপূর্বক দখল করে নেন। মৎস্য খামারের খুঁটিও সরিয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে আব্দুল হাই মৎস্য খামারে থাকা লোকজনসহ মোস্তফা মিয়ার স্বজনদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। এতে ইংল্যান্ড প্রবাসী মোস্তফা মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এলাকাবাসী জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে অবৈধভাবে পাঠান্তর খালের দখল করে লিজ দিয়ে টাকা আত্মসাত করছেন ইউপি মেম্বার আব্দুল হাই। খাল লীজ দিয়ে ওই এলাকার সুফি উদ্দিনের কাছ থেকে আরও ২ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। এ ঘটনায় সুফি উদ্দিন তার বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সুফি উদ্দিনের ব্যবসায়ীক পার্টনার আব্দুল মুহিত জানান, দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য আব্দুল হাই সরকারি খাল লীজ দিয়ে আসছেন। তিনি অবৈধভাবে সরকারি খাল দখল করলেও কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেননি। কেউ প্রতিবাদ করলে আব্দুল হাইসহ তার লোকজন দিয়ে তাদের উপর অত্যাচার শুরু করেন।
ইংল্যান্ড প্রবাসী মোস্তফা মিয়া জানান, অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করে নিজের জায়গা বলে প্রায় ২০ বছর পূর্বে ইউপি সদস্য আব্দুল হাই তার কাছে দলিল মূলে বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ইদানিং ইউপি সদস্য আব্দুল হাই আমার কাছে আরও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই চাঁদা না দেয়ায় তিনি আমার কাছে বিক্রয়কৃত সরকারি জায়গা আবারও জোরপূর্বক দখল করে নেন। পরবর্তীতে খামারের লোকজনসহ আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হত্যা হুমকি দেন। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেছি। তিনি বলেন, নবীগঞ্জ শহরে আমাদের বাসা। মান্দারকান্দি এলাকায় জায়গা ক্রয় করে শখের বশে খামার করেছি। কিন্তু আব্দুল হাইয়ের যন্ত্রণায় আমরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। এ ব্যাপারে আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।