হবিগঞ্জ শহরে আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং পাইপ লাইনের গ্যাস পেতে ভূমিকা রাখেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ চৌধুরী
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ শত বছরের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শহরের আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পর্কে হবিগঞ্জ পৌরসভার টানা চার বারের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী জানান- তৎকালীন সময়ে চৌদ্দগ্রামে আধুনিক বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে ওই প্রকল্পে হবিগঞ্জকে অন্তর্ভূক্ত করেন। এরপর হবিগঞ্জ শহরের সর্বত্র অত্যাধুনিক উন্নতমানের স্টিলের খুঁটি ও রাবার কোটেড তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।
হবিগঞ্জের মানুষ অনেক আন্দোলন সংগ্রামের সাক্ষী। তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে বড় আন্দোলন ছিল সিলেট বিভাগ আন্দোলন। সিলেট প্রবাসীরা বিশেষ করে লন্ডন প্রবাসী সিলেটিরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোন টাকা পাঠাবে না, বিমানে চড়বে না বলে অঙ্গীকার করেন। ওই সময়ে তাদের ডাকা আন্দোলন সংগ্রাম চলাকালে, আন্দোলনকারীদের কঠোর অবস্থানের কারণে সকল দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে যেতো।
সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ চৌধুরী আরো বলেন- তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্বগ্রহণ করে শহরের আনাচে কানাচে রাস্তাঘাট মেরামত করেন। দ্বিতীয় বার নির্বাচনের পূর্বে শহরবাসীর মাঝে গ্যাসের দাবি জোরালো হয়ে উঠে। শহরবাসীর দাবি ছিল গ্যাস না আনলে তারা ভোট দেবেন না। এ অবস্থায় তিনি অনেকটা বেকায়দায় পড়ে যান। ওই সময়ে তিনি এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের সেক্রেটারি শফিউল আলমের শ্মরণাপন্ন হন। শফিউল আলম এক সময় হবিগঞ্জের এসডিও এবং বিভাগীয় কমিশনার ছিলেন। তখন গ্যাস সরবরাহের লক্ষে চা বাগানের একটি প্রজেক্ট ছিল। ওই প্রজেক্টের মাধ্যমে হবিগঞ্জ শহরে পাইপ লাইনের গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী। তখন ক্ষমতাসীন এরশাদ সরকার হবিগঞ্জ জালাল স্টেডিয়ামে এসে ওই গ্যাস সরবরাহ লাইনের উদ্বোধন করেন। এরপর শহরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ লাইন বিস্তৃত করা হয়। তখন উমেদনগর হবিগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্ভূক্ত ছিল না। তখনকার সময়ে হবিগঞ্জ পৌরসভার অফিস ছিল খুবই ছোট। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের সহায়তায় আধুনিক পৌর ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। পরে অর্থমন্ত্রী শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া আধুনিক পৌর ভবনের উদ্বোধন করেন। ওই পৌর ভবনের ডিজাইন করিয়েছিলেন তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী। তার করানো ডিজাইনটি গ্রহণ করা হয় এবং সারা দেশে সেই ডিজাইনের আদলে পৌর ভবন নির্মাণ করা হয়। শহীদ চৌধুরী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের একটি মানসম্পন্ন অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম কিবরিয়া পৌর মিলনায়তন। এটি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অব্যবহৃত হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যা কারো কাম্য নয়।