অনলাইনে পশু ক্রয় করতে ক্রেতাদের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না
এসএম সুরুজ আলী ॥ আগামী ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে হবিগঞ্জে জমে উঠেছে পশুর হাট। তবে পশুর হাটগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। শুক্রবার হবিগঞ্জ শহরের গরুর বাজারে ছোট, মাঝারী ও বড় সাইজের কয়েক হাজার গরু উঠে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মুল বাজার, খোয়াই নদীর পাড়সহ কামড়াপুর বাইপাস সড়কের মোড় পর্যন্ত কোরবানীর পশু উঠেছে। যার ফলে পশু বিক্রেতা ও ক্রেতাদেরকে বাজারে গাদাগাদি করে চলাচল করতে হচ্ছে। অধিকাংশেরই মুখে মাস্ক ছিল না। এতে করোনার ঝুঁকি আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজারে কেনাবেচার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে বাজারে সর্বোচ্চ আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা দামে গরু বিক্রয় হয়েছে। বাজারের সব চাইতে বড় সাইজের গরু বাদশার দাম ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা হয়েছে। এরপর লাখাইর ভাদিকারার সোহেল মিয়ার খামারের ফিজিয়ান জাতের একটি গরুটি দাম ৩ লাখ টাকা হয়েছে। গরু’র মালিক এর দাম ৯ লাখ টাকা চাচ্ছেন।
গরু ক্রয় করতে আসা রিচি গ্রামের বাসিন্দা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মুকুল জানান, বাজারের পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে করোনার পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। কেউ সামাজিক দূরত্ব যেমন বজায় রাখছেন না, তেমনি স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা মাস্ক ব্যবহার করছেন না। তিনি বাজারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়াও তিনি জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম কম হলেও এ বাজারে গরুর পাইকাররা দাম ছাড়ছেন না। পাইকাররা বলছেন করোনার কারণে বাহির থেকে গরু না আসায় অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার গরু’র দাম বেশি।
এ ব্যাপারে গজারিয়াকান্দি গ্রামের গরু’র পাইকারী ব্যবসায়ী মোঃ জবেদ আলী জানান, গ্রাম অঞ্চলে যারা গরু লালন-পালন করেন তাদের কাছ থেকে যখন আমরা গরু ক্রয় করতে যাই তখন তারা অতিরিক্ত দাম চান। গরু’র দাম উপযুক্ত না হলে তারা গরুগুলো বিক্রি করতে চান না। বাধ্য হয়ে আমাদেরকে টার্গেটের চেয়ে বেশি দামে গরু ক্রয় করতে হচ্ছে। কিন্তু বাজারে নিয়ে আসার পর আমরা যে দামে ক্রয় করেছি এর চেয়ে কম দাম বলেন ক্রেতারা। এ অবস্থায় আমাদের অনেক গরু ক্রয়কৃত দামের চেয়ে কমে বিক্রয় করতে হচ্ছে। এতে আমরা পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তবে গরু’র খামারীরা দাবি করেছেন বড় সাইজের গরুগুলো লালন পালন করতে যে খরচ হয়েছে বর্তমান বাজারে ক্রেতারা গরুর দাম অনেক কম বলছেন। ওই দামে গরু বিক্রি করলে খামারীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এছাড়াও করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন বড় সাইজের গরু কোরবানী দিতে আগ্রহী নন। এ ব্যাপারে বাজার ইজারাদার মিজানুর রহমান জানান, গতকাল বাজারে বড় সাইজের অনেক গরু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মাঝারী ও ছোট সাইজের গরু বেশি বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন- বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বার বার মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু তারা তা মানছেন না। এছাড়া অনেকেই মাস্ক পরছেন না। আমরা বার বার মাস্ক পরার জন্য অনুরোধ করছি। কিন্তু ক্রেতা ও বিক্রেতারা তা শুনছেন না। এদিকে সামনের বাজারগুলোতে জাল নোট সনাক্ত করণের মেশিন বসানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতে গরু ক্রয় বিক্রয় হয় এই দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। তবে অনলাইনে গরু বেচাকেনা শুরু হলেও হবিগঞ্জের ক্রেতারা অনলাইনে পশু ক্রয় করতে আগ্রহী নন। ক্রেতারা জানিয়েছেন অনলাইনে যে পশুর ছবি দেখানো হয়, পরবর্তীতে সরাসরি গিয়ে ছবির সাথে এর মিল পাওয়া যায় না।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com