![](https://dailyhabiganjermukh.com/wp-content/uploads/2024/10/Tuhel.jpg)
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পরিবারের সদস্যরা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ মিথ্যা মামলা দিয়ে হবিগঞ্জের তরুণ উদ্যোক্তা, ভিডিও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও লেখক এ.টি.এম সামিউজ্জামান তোহেলকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিপক্ষের হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন লেখক তোহেল।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া ইউনিয়নের গুনই গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে সামিউজ্জামান তোহেল (২০) দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড করে আসছেন। এজন্য এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন “আদর্শ ছাত্র সমাজ কল্যাণ পরিষদ’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন। পাশাপাশি এই তরুণ বয়সে তিনি অদম্য চিন্তা ধারণা নিয়ে ৪টি বই লিখেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরব ছিলেন। বিভিন্ন অসঙ্গতি, অন্যায়, অবিচার, জুলুম, নির্যাতনের বিষয়গুলো নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করতেন তিনি। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৬ শে ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তোহেলের সাথে একই গ্রামের মাতব্বর ও নেতা রাগিব আলী গংদের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। অভিযোগ উঠে- এ ঘটনায় রাগিব আলীর ছেলে মেসবাহুল আরফীন আরফন নিহত হয়। আরফন নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাগিব আলী গংরা তোহেলের বাড়িসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে তোহেল ও তার পরিবারের লোকজন গ্রাম ছেড়ে আত্মগোপন করেন।
১৪ জানুয়ারি সরেজমিনে গুনই গ্রাম পরিদর্শন করে দেখা যায়, তোহেলদের বাড়িঘর অনেকটা পুরুষশূন্য। এ সময় তোহেলের চাচা আব্দুল মিয়া সাংবাদিক দেখে এগিয়ে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে। কিন্তু কেউ মারা যাননি। একই দিন বিকেলে রাগিব আলীর ছেলে মেসবাহুল আরফীন আরফন তাদের বাসার ছাদের উপর থেকে পড়ে মারা যায়। পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রচার করেন সংঘর্ষে আরফন মারা গেছে। এ ঘটনায় আমাদের পরিবারের লোকজনদের উপর বানিয়াচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই হত্যা মামলা দায়ের করার পর আমার ভাতিজা তোহেল, তার মা-সহ পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন হন। এই মামলায় আমার উঠতি বয়সী ভাতিজার সকল স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। এখন তারা আমাদের পরিবারের উপর ঝুলুম নির্যাতন করছে। একের পর এক মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দিয়ে হয়রানি করছে তারা। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি।
এ ব্যাপারে তরুণ লেখক সামিউজ্জামান তোহেল মা ছোকেরা বেগম জানান, আমার ২টা দোকান লুটপাট করে আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। আমাদের বাড়িঘরেও হামলা ও লুটপাট করে ধান, চাল, গরু, বাছুর, স্বর্ণালংকারসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও আমাদের অনেক জমি-জমাও তারা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে এবং প্রতিদিন তারা আমাদের পুরুষশূন্য বাড়িতে এসে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আরফন হত্যা মামলার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। এছাড়া ২০২০ সালের ২৫ এপ্রিল কবিরপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন খানের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় নিয়ে এ-টি.এম সামিউজ্জামান তোহেল লেখালেখি এবং একটি ভিডিও তৈরি করেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে তোপের মুখে পড়েন তিনি। ফলশ্রুতিতে কিছু ক্ষমতাশালীর অপহরণের শিকার হন সামিউজ্জামান তোহেল। এ ঘটনায়ও নাসির উদ্দিন খান তার নামে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। এই মামলাটি চলমান। তার পরিবারের দাবি এই মামলায় তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।