নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, বাহুবল উপজেলায় গত দুই দিনে ৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৭ জনই ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ ফেরত বলে জানা গেছে। এসব উপজেলার পার্শ্ববর্তী নবীগঞ্জে এখন করোনা আতঙ্ক ভর করেছে। ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ ফেরত শ্রমজীবীদের নিয়ে এ উপজেলার বাসিন্দারা আতঙ্কিত।
জানা গেছে, ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে শ্রমিকরা ক্রমাগত এ উপজেলায় আসছেন। করোনা আক্রান্ত পার্শ্ববর্তী উপজেলা ও ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লকডাউন থাকার পরও প্রতিদিন অ্যাম্বুলেন্স কিংবা মাছ ও পন্যবাহী গাড়িসহ অভিনব উপায়ে রাতের আঁধারে তারা অবাধে আসছেন লোকজন। প্রায় প্রতিদিনই এলাকায় দেখা যাচ্ছে আগত নতুন মুখ। এদের অনেকে নিজ বাড়িতে নিভৃতে থাকলেও অনেকে আবার স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে অবাধে চলাফেরা করছেন।
মঙ্গলবার নবীগঞ্জের উত্তরের সীমান্তবর্তী বানিয়াচং উপজেলার করোনা শনাক্ত হওয়া ৩ জনই ঢাকাফেরত শ্রমিক। নবীগঞ্জের পশ্চিম সীমান্তবর্তী উপজেলা আজমীরিগঞ্জ উপজেলার আক্রান্তরাও ঢাকাফেরত। এছাড়াও নবীগঞ্জের পূর্ব সীমান্তবর্তী উপজেলা বাহুবল উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনজন। এর পর থেকে করোনা আতঙ্ক ব্যাপকভাবে তাড়া করছে নবীগঞ্জ উপজেলাবাসীকে।
নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নে হৃদরোগে এ যুবকের মৃত্যুর ঘটনা জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে ওই পরিবারের পাঁচজনসহ মোট ছয়জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখন পযন্ত তাদের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
এদিকে পার্শ্বাবর্তী উপজেলাতে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসন সীমান্তবর্তী সব ইউনিয়নগুলো লকডাউন ঘোষণা করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রতিদিনই পার্শ¦বর্তী উপজেলা ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ফেরত শ্রমজীবী মানুষ প্রবেশ করছেন। উপজেলা প্রশাসন বিভিন্নভাবে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি হোম কোয়ারেন্টিন, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করলেও ঠেকানো যাচ্ছে না বহিরাগতদের অবাধ চলাফেরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, উপজেলায় করোনা বিপর্যয় রোধে চলমান সব কার্যক্রমের অন্তরায় হচ্ছে পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলো এবং ঢাকা-নারায়ণগঞ্জফেরত শ্রমজীবীরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে তাদের অবাধে উপজেলায় প্রবেশ বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।