স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ১০নং লঙ্করপুর ইউনিয়নের লস্করপুর গ্রামে কাঁঠাল চুরি করতে বাধা দেওয়ায় এক অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূকে বেধড়ক মারধর করে গর্ভপাত ঘটিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় গত ৩০ জুন ৮ জনকে আসামী করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে বাদীপক্ষের লোকজন শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।
সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুন দুপুরে লস্করপুর গ্রামের বাসিন্দা আল আমিন (লিটন)-এর বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে গাছ থেকে কাঁঠাল নিয়ে যাবার চেষ্টা করে একই এলাকার কামাল হাসানের স্ত্রী দিপু আক্তার, তাদের সন্তান সায়মন হাসান, সাইম আলম ও ফজলুর রহমানের ছেলে মঞ্জুর এলাহি জারিফ সহ আরও কয়েকজন। এসময় আল আমিন লিটন বাড়িতে ছিলেন না। তিনি সড়ক ও জনপথ অফিসে কর্মরত। ফলে অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী নাছিমা আক্তার চুরি ঠেকাতে বাধা দিলে অভিযুক্তরা তাকে অতর্কিত পিটিয়ে গুরুতর জখম করে, এতে তার গর্ভপাত ঘটে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় দ্রুত তাকে সিলেট রাগিব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জেরে ওইদিন সন্ধ্যায় আবারও হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। আল আমিনের আত্মীয় সাজু মিয়া, সাব্বির মিয়া, শামীম মিয়া, আপন মিয়া, রিমন মিয়া, সামির মিয়া ও রহমত আলীকে রাস্তায় পেয়ে তাদেরকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তারা হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান- আসামী সোহানুর রহমান নানু (৪২) লস্করপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা মৎস্যজীবী আওয়ামী লীগের সহ সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের উপর হামলায় জড়িত ছিলেন। তবুও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তিনি বীরদর্পে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শুধু তাই নয়, মামলার ৪নং আসামী সায়মন হাসান (২১) একজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির। সে সবসময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করে বলে অভিযোগ করেন বাদী।
মামলার বাদী আল আমিন (লিটন) জানান- আসামীরা খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমা রয়েছে। তাই আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে প্রচলিত আইনে বিচার দাবি জানান তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ আওলাদ হোসেন বলেন, ৮ জন আসামীর মধ্যে কয়েজন জামিনে রয়েছে, তন্মধ্যে ১ জনকে আদালত জেলহাজতে প্রেরণ করেন। বাকী আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে, শীঘ্রই এ মামলার চার্জশীট দেওয়া হবে।