
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর নাগরিক সভা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, অপরাপর সরকারের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও খোয়াই নদী সংরক্ষণে নানা প্রকল্প গ্রহণ করছে। হবিগঞ্জের মানুষ পুরাতন খোয়াই রক্ষায় যেকোন সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে দীর্ঘদিন ধরে সারাদেশে চলমান নদী রক্ষার নামে গৃহীত প্রকল্প সমূহের মাধ্যমে দখলদারদের বৈধতা দেয়ার যে বাস্তবতা রয়েছে তার পুনরাবৃত্তি হবিগঞ্জের মানুষ হতে দেবেনা। তাই পুরাতন খোয়াই পুনরুদ্ধার এর আগে চলমান দখল বন্ধ করে শ্যামলী, মুসলিম কোয়ার্টার, পুরান মুন্সেফ, শায়েস্তানগর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে চলমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলা করা উচিত। পুরাতন খোয়াই নদী দখলমুক্ত করার দাবিতে নাগরিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
১৮ জুলাই (শুক্রবার) সকাল ১০ টায় ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও নদীপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী শ্যামলী এলাকার অরবিট স্কুল প্রাঙ্গণে এই সভা ও নদীর একাংশ পরিদর্শনের আয়োজন করে। অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন অধ্যাপক মো: ইকরামুল ওয়াদুদ ও হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল। বক্তব্য রাখেন সৈয়দ মুশফিক আহমেদ, অ্যাডভোকেট হাসবি সাঈদ চৌধুরী, আকলু মিয়া, ফয়সল আহমদ প্রমুখ। ধারণা বক্তব্য রাখেন খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরা হবিগঞ্জের সদস্য সচিব তোফাজ্জল সোহেল।
শরীফ জামিল আরো বলেন, পুরাতন খোয়াই সংরক্ষণে নদীর সীমানা নির্ধারণ যেকোনো সমন্বিত পরিকল্পনার প্রথম পদক্ষেপ। যেহেতু হবিগঞ্জের সিএস জরিপ নেই কাজেই স্থানীয় পরিবেশবাদী ও বয়োজ্যেষ্ঠদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষার মাধ্যমে নদীর সীমানা চিহ্নিত করতে হবে।
পরিদর্শনকালে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, পুরাতন খোয়াই নদী হচ্ছে হবিগঞ্জের ফুসফুস। দখল দূষণের মাধ্যমে কেবল এ নদীর সর্বনাশা ডেকে আনা হয়নি; পুরো শহরের পরিবেশ ও প্রতিবেশকে হুমকিতে ফেলা হয়েছে। অথচ এই নদীর মাধ্যমে হবিগঞ্জ একটি পরিকল্পিত সুস্থ সুন্দর শহর হতে পারতো। এ নদীর সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে পানি নিষ্কাশনসহ নগরায়নের যাবতীয় অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধান সম্ভব।
খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, দীর্ঘদিন দখল- দূষণ বন্ধ না করার কারণে জলাবদ্ধতায় হবিগঞ্জে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। মাছুলিয়া থেকে বগলাবাজার এর মাছবাজার পর্যন্ত কোথাও দখল থেমে নাই। দখল কেবল ব্যক্তি পর্যায়ে হয়নি; বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি স্থাপনও গড়ে তোলা হয়েছে পুরাতন খোয়াই নদীর বুকে। এখনো দখল অব্যাহত রয়েছে। পুরাতন খোয়াই পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে হবিগঞ্জের মানুষ এর দীর্ঘদিনের আন্দোলন আরো জোরদার করা হবে।