১১টি গরু ১১টি ছাগল ও শতাধিক হাঁস পুড়ে ছাই ॥ ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি
নুর উদ্দিন সুমন ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাটিয়াজুড়ি ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে দুইটি পরিবারের ঘরবাড়ি ও গৃহপালিত পশুপাখি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বুধবার দিবাগত রাত প্রায় ২টা থেকে ৩টার মধ্যে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কদ্দুস ও তার ছোট ভাই কদর আলী। আগুনে তাদের বসতঘর ও গোয়ালঘর সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়। প্রাণ হারিয়েছে ১১টি বড় গরু, ১১টি ছাগল এবং শতাধিক হাঁস। ধ্বংস হয়ে গেছে আসবাবপত্রসহ ঘরের যাবতীয় মালামাল।

স্থানীয়রা জানান, আগুনের সূত্রপাত হয় মশার কয়েল থেকে গভীর রাতে। প্রথমে গোয়ালঘর থেকে ধোঁয়া দেখা যায়, মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের বসতঘরেও। ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়ার আগেই স্থানীয়রা বালতি ও পাইপ দিয়ে পানি ছুড়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও গবাদি পশু ও সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। আব্দুল কদ্দুস জানান, তার ৫টি গরু, ৩টি ছাগল ও প্রায় ৪০টি হাঁস ছিল। এছাড়াও ঘরের ফার্নিচার পুড়ে গেছে। তার ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১৫ লাখ টাকা। কদর আলীর ভাষ্য, তার ৬টি গরু, ৮টি ছাগল এবং ৬০টির মতো হাঁস আগুনে মারা গেছে। তিনিও প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দুই ভাই মিলে গরু-ছাগল পালন করেই সংসার চালাতেন। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় রুমান মিয়া বলেন, ঘুমের মধ্যেই চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখি আগুনের লেলিহান শিখা আকাশ ছুঁই ছুঁই করছে। আমরা অনেক চেষ্টা করেও প্রাণিগুলো রক্ষা করতে পারিনি। ওরা খুব কষ্ট করে গরু ছাগল লালন করত, এখন সব শেষ।

এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকারি সহযোগিতার প্রক্রিয়া চলমান।

পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হান্নান জানান, গরু ছাগল তাদের একমাত্র ভরসা, তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দানশীল ব্যক্তিদেরও এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি। এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়া পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো এখন মানবিক দায়িত্ব। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিত্তবান ব্যক্তি ও সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান  দুই পরিবারের।